লকডাউনের ৫ম দিন শহরে লোক সমাগম ছিল বেশি




নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশজুড়ে সর্বাত্বক লকডাউন শুরুর গেল ৪দিনের তুলনায় পঞ্চমদিন সোমবার যশোর শহরের রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল ছিল যেকোন দিনের চেয়ে বেশি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও কাঁচা বাজারগুলোতে মানুষের স্বাস্থ্যবিধি ভেঙ্গে কোনাকাটা করতে দেখা যায়। অলিগলিতেও স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করে ভিড় জমাতে দেখা যায়। তবে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পথে পথে আগের মতোই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা ছিল। ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির তল্লাশি পেরিয়েই মানুষ শহরে বেরিয়ে পড়েন। এদিকে, লকডাউন ভঙ্গ করার অপরাধে যশোরের আট উপজেলায় এদিন ১৪টি অভিযানে ৮২টি মামলায় সাড়ে ৬৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ১ জুলাই থেকে সাত দিন সারাদেশে কঠোর লকডাউন আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সারাদেশের ন্যায় যশোরে কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে শক্ত অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন। এবারের লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা। সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র মাঠে নামার খবরে এবং জেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে প্রথম ৪ দিন জনসাধারণের চলাচল কিছুটা কমছিলো। তবে লকডাউনের পঞ্চম দিন সোমবার সকালের দিকে মানুষের চলাচল বাড়তে শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে শহরের প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে আরো কড়াকড়ি করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। প্রতিটি চেকপোস্টে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে আনসার-পুলিশের সদস্য ছিলেন। তার পরও শহরে মানুষের উপস্থিতি বাড়তেই দেখা যায়। একই সাথে গেল ৪দিনের তুলনায় গতকাল রাস্তায় রিকশা চলাচলও ছিল বেশি।

এদিন বেশি কিছু এলাকায় নির্দেশনা উপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা ও মাস্ক না পরে বাইরে বের হওয়ার কারণে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

দড়াটানার এলাকার লকডাউন বাস্তবায়নে দায়িত্বে থাকা স্কাউটের সদস্য তন্ময় শেখ জানান, বিগত চার দিনের তুলনায় সোমবার মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। লকডাউনে মানুষ আর কয়দিন ঘরে থাকবে-এমন প্রশ্নও করেন তিনি। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের লকডাউন কার্যকরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অধিক তৎপর রয়েছে। এটা বলতে হবে এবারের লকডাউনে অন্য যেকোন বারের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। একমাত্র রিকশা ছাড়া অন্য কিছু নেই গণপরিবহন হিসেবে। তবে কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ নিরুপায় হয়েই ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন-এমন দাবি ভুক্তভোগীদের।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান জানিয়েছেন, লকডাউনের শুরুর দিন থেকেই আমরা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউন কার্যকরের চেষ্টা করে যাচ্ছি। সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। শহরের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া লকডাউন নিশ্চিত করতে জেলাজুড়ে জেলা প্রশাসনের সাথে এবারের লকডাউন বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। সেই সাথে পুলিশ-আনছার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও কাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শহরজুড়ে টহল পুলিশ কাজ করছে। রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই জরিমানা না করে জনগণকে সচেতন করতে মনোযোগী।





Explore More Districts