কাউনিয়ায় বেড়েই চলছে করোনা, চোর-পুলিশ খেলছেন দোকানীরা
মার্কেট কিংবা বাজারগুলোতে ক্রেতা সমাগম। দোকান মালিকরা কেউ শাটার অর্ধেক
খূলে , কেউ আবার শাটার পুরোটাই খোলা রেখে ক্রেতাদের কাছে করছেন বেচাবিক্রি।
প্রশাসন, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের গাড়ি, সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতি টের পেলেই বন্ধ করে দেয় দোকান। প্রশাসন চলে গেলে আবার তারা ব্যবসা
প্রতিষ্ঠান খুলে শুরু করেন বেচাবিক্রি।
লকডাউনের ষষ্ঠদিন মঙ্গলবার রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার সারাই মিনা বাজার মাকের্টের ব্যবসায়ীদের এমনই নানা কৌশলে দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে হারাগাছ পৌরসভার দালালহাট, নতুৃনবাজার,পাইকার বাজার, হক বাজার, হারাগাছ স্কুল মার্কেট, সারাই মিনাবাজার, আমবাগান,মেনাজবাজার, হারাগাছ ইউনিয়নের খানসামা জামতলা, বকুলতলা, মীরবাগ, জয়বাংলা বাজারসহ উপজেলার অধিকাংশ জায়গায় দোকানের এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এতে করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এলাকার সচেতন মহলের
মানুষেরা।
মেনাজ বাজার এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, কাউনিয়ায় প্রতিদিন যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে এখনই সচেতন না হলে, ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে। মধ্যপাড়া গ্রামের বসিন্দা লিটন মিয়া বলেন, শ্রমিক অধ্যুষিত হারাগাছ পৌর
এলাকায় এমনিতেই জ্বর, সর্দিকাশি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সবাইকে এখনই সচেতন হতে হবে।
হারাগাছ পৌর মেয়র এরশাদুল হক বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতিটি এলাকার মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু শ্রমিক অধ্যুষিত হারাগাছে অনেকেই সরকারি বিধি নিষেধ মানতে চাইছে না। এরপরও আমরা চেষ্ঠা করছি সরকারি বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দালালহাট এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন,বেচাবিক্রি না করলে সংসার চলাবো কি করে। হাতে যে টাকা ছিল তা জুনে ব্যাংক ও এনজিওর ঋণ পরিশোধ করতে শেষ হয়ে গেছে। সামনে ঈদ এসেছে। পশু কোরবানী সহ
দোকানের কর্মচারীদের বেতন দিতে তো হবে।
হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাকিবুল ইসলাম পলাশ বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধ করতে সাধারণ জনগণ ও দোকানদারদের সরকারি বিধিনিষেধ মানার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তারপরও কতিপয় ব্যবসায়ী সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে দোকান খুলে বেচাবিক্রি করছে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে
যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা প্রধান কর্মকর্তা ডা: মীর হোসেন। তিনি জানান, গত রবিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ১৮ জন ব্যক্তি ছিল। সোমবার সন্ধায় রংপুর পিসিআর ল্যাবের তথ্যমতে এ উপজেলায় আরো ২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিধি না মানায় উপজেলার প্রায় এলাকায় করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া প্রায়
প্রতিটি বাড়ীতেই শিশু সহ বয়োবৃদ্ধরা জ্বর, সর্দি কাশি আক্রান্ত হচ্ছে।
কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা তারিন বলেন, আমরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছি। করোনা বেড়ে যাচ্ছে, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। কারও ঘরে যদি খাবার না থাকে তাহলে মুঠোফোনে বা ৩৩৩ নম্বরে
কল করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে খাবার পৌঁছে দেব। তিনি আরো বলেন, সরকারি বিধি নিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।